প্যালিনড্রোম ১
'দাদাঠাকুর' শরৎচন্দ্র পণ্ডিতকে শতকোটি প্রণিপাত জানিয়ে উপস্থাপন করছি আমার মস্তিষ্কপ্রসূত কিছু সমানুলোমবিলোম রচনা – ইংরেজিতে যাকে বলে প্যালিনড্রোম (palindrome)। যেখানে-যেখানে প্রয়োজন মনে করেছি, মূল লেখার নিচে ব্যাখ্যামূলক দু-চার কথাও রেখেছি। এগুলির কোনটি অন্য কেউ আগেই রচনা ক'রে প্রকাশ করেছেন ব'লে পাঠক/পাঠিকা যদি জানেন, তবে প্রমাণসহ আমাকে জানিয়ে বাধিত করবেন।
আলোচ্য ব্যক্তির পেশা কবিতা-রচনা না জলযান-চালনায় যোগদান, সেই নিয়ে প্রশ্ন। নিম্নলিখিত (আমার স্বরচিত, দ্ব্যর্থবোধক) স্তবকটি প'ড়ে তেমন সন্দেহ কি মনে জাগতে পারে না?
কুমড়ো, সূর্যমুখী প্রভৃতির বীজ মসলা-সহ ভেজে-ভুজে চমৎকার মুখরোচক লঘুখাদ্য তো প্রস্তুত করা হয়েই থাকে (এছাড়া কড়াইশুঁটি, সবরকম ডাল আর বাদামও ত বীজেরই প্রকারান্তর বটে, তবে সে-সব না-হয় বাদই দিলাম); আর খালবিল-নদীনালার ধারে গিয়ে এইসব দিয়ে মুখ চালানোর মজাটাই কি আলাদা নয়? চিবিয়ে ছিবড়েটা ফেলে না দিয়ে যদি গিলে নেওয়া যায়, তাহলে যে সেটা পেট-পরিষ্কারের সহায়ক হবে, তা আশা করি আর আমার বলার অপেক্ষা রাখে না। আর গেলার আগে ভালভাবে না চিবোলে রসগ্রহণও অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে, গলায় ফোটার বা আটকে যাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। অতএব উপরিলিখিত বাক্যটিতে এক নির্দোষ উপদেশমাত্র বিধৃত রয়েছে।
- লেঠেলটা হরদের হটাল ঠেলে।
অর্থাৎ – জনৈক লাঠিয়াল হর-নামক ব্যক্তি ও তাঁর সঙ্গীদের ঠেলে অপসারিত/পশ্চাৎপদ করলেন।
- হেন রবীন্দ্র বীর নহে?
অর্থাৎ যে রবীন্দ্র-নামক ব্যক্তি এমন, তিনি কি বীরশ্রেণীভুক্ত নন? রবীন্দ্রনাথ কখনো যুদ্ধে যাননি বটে, তবে তাঁর নাইট উপাধি ফিরিয়ে দেওয়া প্রভৃতি বহু সাহসিক কর্মের উল্লেখ ক'রে উক্ত প্রশ্নটি করাই চলে।
পুনশ্চ: এই বাক্যের মধ্যস্থিত "রবীন্দ্র বীর" অংশটুকুও সমানুলোমবিলোম! প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, "রবীনদা দানবীর" এই প্যালিনড্রোমটি আগে থেকেই জানা -- এর মুড়োয়-লেজায় 'ন' আর 'হে' জুড়ে পাওয়া যায় অনুরূপ এক সমানুলোমবিলোম বাক্য "হেন রবীনদা দানবীর নহে?"।
পুনশ্চ: এই বাক্যের মধ্যস্থিত "রবীন্দ্র বীর" অংশটুকুও সমানুলোমবিলোম! প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, "রবীনদা দানবীর" এই প্যালিনড্রোমটি আগে থেকেই জানা -- এর মুড়োয়-লেজায় 'ন' আর 'হে' জুড়ে পাওয়া যায় অনুরূপ এক সমানুলোমবিলোম বাক্য "হেন রবীনদা দানবীর নহে?"।
- লড়ি' চঞ্চল লঞ্চ চড়িল।
অর্থাৎ চঞ্চল-নামক ব্যক্তি বহু সংঘর্ষের পর একটি লঞ্চে আরোহণ করলেন।
চন্দ্রবিন্দুটাকে একটু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
অর্থাৎ – দেখ, নেবলা-নামক মাঝির মালা-নাম্নী কন্যা বনের মধ্যে রয়েছে। 'নাবিল' – আরবি-ভাষা থেকে আসা এই নামটির ঈষৎ-অবজ্ঞাসূচক (বা অতিপরিচয়সূচক) রূপান্তর হ'ল নেবলা/ন্যাবলা, যা ডাকনাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
- রাম, আজি রাতে কালুকে লুকাতে রাজি আমরা।
--
- খাঁ-চাচাকে চা চাখা!
চন্দ্রবিন্দুটাকে একটু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
- হের, নেবলা-মাঝির ঝি মালা বনে রহে।
অর্থাৎ – দেখ, নেবলা-নামক মাঝির মালা-নাম্নী কন্যা বনের মধ্যে রয়েছে। 'নাবিল' – আরবি-ভাষা থেকে আসা এই নামটির ঈষৎ-অবজ্ঞাসূচক (বা অতিপরিচয়সূচক) রূপান্তর হ'ল নেবলা/ন্যাবলা, যা ডাকনাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
- কবি না নাবিক?
আলোচ্য ব্যক্তির পেশা কবিতা-রচনা না জলযান-চালনায় যোগদান, সেই নিয়ে প্রশ্ন। নিম্নলিখিত (আমার স্বরচিত, দ্ব্যর্থবোধক) স্তবকটি প'ড়ে তেমন সন্দেহ কি মনে জাগতে পারে না?
কত আত্মারে লয়ে যায় দূরে আঁচড় কাটিয়া কাটিয়া।
কভু গভীরতা, বঙ্কিম গতি,
কভু প্রশান্তি – ক্ষোভের বিরতি,
কভু কল্লোল সঙ্ঘাত অতি
আলোড়িয়া তুলে ছাতিয়া।
Comments
Post a Comment